মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৬ অপরাহ্ন
সাকিবুজ্জামান সবুর:
প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে পাল্টে গেছে ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার একমাত্র নারী নরসুন্দর শেফালী রানী’র জীবন। এক যুগ ধরে তিনি উপজেলার শৌলজালিয়া ইউনিয়নের স্থানীয় দোগনা বাজারে সেলুনের কাজ করে ৫ সন্তানকে লেখা পড়া করাচ্ছেন। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসলে তাকে ৪ শতাংশ জমিসহ একটি সেমি পাকা বাড়ী নির্মান করে দেওয়া হয়। এর আগে তিনি অন্যের জমিতে একটি ঝুপড়ি ঘরে সন্তানদের নিয়ে থাকতেন সংগ্রামী এই নারী।
জানাযায়, এক সময় শেফালী রানীর স্বামী সংসার সবই ছিল। স্বামী যাদব শীল নর সুন্দরের কাজ করতেন। তাই দিয়ে ভালোই চলতো তাদের সংসার। হঠাৎ ২০১২ সালে স্বামী যাদব শীল মানুষিক ভারসাম্যহীন হয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়ায় অন্যের জমিতে একটি ঝুপড়ি ঘরে ৪ মেয়ে ও ১ ছেলে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করেন শেফালী রানী। সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে কোন উপায় না পেয়ে সংসারের হাল ধরেন শেফালী রানী নিজেই। জীবন যুদ্ধে হার না মানা নর সুন্দর সেফালী রানী অদম্য সাহস নিয়ে এক যুগ ধরে স্থানীয় দোগনা বাজারে রাস্তার পাশে অন্যের একটি ঘরের বারান্দায় নিজেই সেলুনের কাজ শুরু করেন। তার উপার্জিত অর্থ দিয়েই শেফালী রানী ৪ মেয়ে ও ১ ছেলেকে বিভিন্ন স্কুল কলেজে লেখাপড়া করান। তার নিজস্ব কোন জমি না থাকায় অন্যের জমিতে বাশের তৈরি একটি ঝুপড়ি ঘরে সন্তানদের নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। ২০১৯ সালে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসলে তাকে বলতলা গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ৪ শতাংশ জমিসহ একটি সেমি পাকা বাড়ী নির্মান করে দেওয়া হয়। আর এতেই পাল্টে যায় নারী নরসুন্দর শেফালী রানী’র জীবন। এরপর তিনি ঢাকা গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথেও দেখা করেন। তাকে জমিসহ পাকা বাড়ী করে দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি ও স্থানীয়রা।
নর সুন্দর শেফালী রানী বলেন, কখনো কল্পনাও করেনি সন্তানদের নিয়ে আমি পাকা বাড়ীতে থাকতে পারবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মা হয়ে আমাকে ঘর বাড়ী তৈরি করে দিয়েছেন। আমার মাও এ রকমের করে দিতে পারেনি। আমাদের জন্য এমন করতে পারেনি। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
শেফালী রানীর সন্তানরা জানায়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের যে কি সন্দুর একটা বাড়ী করে দিয়েছেন আমাদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। এখন আমরা তার দেওয়া পাকা বাড়ীতে বসবাস করতে পারি। এর জন্য তাকে আমরা অনেক ধন্যবাদ জানাই।
স্থানীয়রা জানায়, নর সুন্দর শেফালী রানী জীবনে অনেক পরিশ্রম করেছেন। বাজারে সেলুনের কাজ করে তার সংসার চালিয়েছেন। এখন নর সুন্দর শেফালী রানীকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একখানা ঘর তুলে দিয়েছেন। এখন তিনি পরিবার নিয়ে সুন্দরভাবে বসবাস করেন। তাদের স্থায়ীভাবে থাকার একটা ব্যবস্থা হয়েছে। সন্তানদের নিয়ে এখন তিনি সুখে আছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুফল চন্দ্র গোলদার বলেন, তার জীবিকা নির্বাহের জন্য স্থানীয় দোগনা বাজারে খুব শীগ্রই একটি দোকান ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে যার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এবং তার বাড়িতে টিউবল ও অন্যান্য যেসব সুযোগ সুবিধার প্রয়োজন তার ব্যবস্থা করা হবে।